কী চেয়েছে? কী পেয়েছে?-গিয়েছে হারায়ে।" -ব্যাখ্যা কর।
আলোচ্য অংশটুকু প্রকৃতিপ্রেমিক কবি জীবনানন্দ দাশ বিরচিত সুরঞ্জনা নামক কবিতা থেকে আলোপকপাত করা হয়েছে।
আলোচ্য কবিতায় জীবনানন্দ দাশ তার কবিতার নায়িকা সুরঞ্জনার নামানুসারে কবিতাটির মূল আলোচনা করেছেন। এ কবিতায় সামগ্রিক বা মূলীভূত সভ্যতার উল্লেখ করেছেন। কবিতার নায়িকা সুরঞ্জনা এ পৃথিবীর তিল তিল সৌন্দর্য, উপমা, রং, রূপ আস্বাদন করে সুরঞ্জিত হয়েছে। কবি তাকে পৃথিবীর বয়সিনী এক মেয়ে বলে সম্বোধন করেছেন। সুরঞ্জনার কালো চোখে যে সৌন্দর্য রয়েছে তা তিনি অনুভব করেছেন এক অপূর্ব অনুভূতিতে। নতুন কিছু সৃষ্টির জন্য কবি এ নারীর কাছে যান। কেননা এ সুরঞ্জনা সৌন্দর্য সভ্যতার প্রতীক। গ্রিক হিন্দুদের মধ্যে তিনি যে কঠিন রূপ দেখেছেন তাতে তার প্রিয়তমা সুরঞ্জনাকে তিলোত্তমা বলে অভিহিত করেছেন কারণ কোনো এক বিধ্বস্ত নগরীতে সুরঞ্জনা টিকে আছে তার আপন পথ পরিক্রমায়। আর এ কারণেই এ পৃথিবীর ইতিহাস চেতনা আরও সৌন্দর্য ও তাৎপর্যময় হয়ে উঠেছে। সুরঞ্জনাকে উল্লেখ করে কবি বলেছেন,
"সুরঞ্জনা, আজো তুমি আমাদের পৃথিবীতে আছো;
পৃথিবীর বয়সিনী তুমি এক মেয়ের মতন;
কালো চোখ মেলে ওই নীলিমা দেখেছো;
গ্রীক হিন্দু ফিনিশিয় নিয়মের রূঢ় আয়োজন
শুনেছো ফেনিল শব্দে তিলোত্তমা-নগরীর গায়ে
কী চেয়েছে? কী পেয়েছে? গিয়েছে হারায়ে।”